সৈয়দ ভাই:
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি—বাংলাদেশের একটি পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি অনেক সময় অতিরিক্ত খালি পেটে থাকা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ কিংবা অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে হয়ে থাকে। যদিও বাজারে নানা ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়, তবে অনেকেই এখন প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া সমাধানের দিকে ঝুঁকছেন। কারণ এসব সমাধান নিরাপদ, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন এবং দীর্ঘস্থায়ী আরাম দিতে পারে।
১. লেবু পানি: খালি পেটে গরম পানিতে আধা চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খেলে পেটের অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে থাকে। এটি পাচনক্রিয়া উন্নত করে এবং গ্যাস্ট্রিক দূর করতে সাহায্য করে।
২. তুলসী পাতা: তুলসী পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-আলসার ও অ্যান্টি-অ্যাসিড গুণাগুণ। দিনে ৪-৫টি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে গ্যাস্ট্রিকের কষ্ট অনেকটাই কমে যায়।
৩. কলা: কলা একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড। এটি পাকস্থলীর মিউকাস ঝিল্লিকে রক্ষা করে এবং অ্যাসিড বাড়তে দেয় না। প্রতিদিন এক থেকে দুইটি কলা খাওয়া গ্যাস্ট্রিক প্রতিরোধে কার্যকর।
৪. ঠান্ডা দুধ: ঠান্ডা দুধ পাকস্থলীর এসিড নিরপেক্ষ করতে সাহায্য করে। খালি পেটে বা গ্যাস্ট্রিকের সময় এক গ্লাস ঠান্ডা দুধ পান করুন।
৫. রসুন: রসুন হজমে সহায়ক। সকালে খালি পেটে এক কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেলে পেটের গ্যাস ও ফোলা ভাব কমে।
৬. মধু: প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক মধু গ্যাস্ট্রিকের জন্য দারুণ উপকারী। এক চা চামচ মধু গরম পানিতে মিশিয়ে পান করলে পাকস্থলীর জ্বালাপোড়া কমে যায়।
৭. পানি: প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করলে পাকস্থলী পরিষ্কার থাকে এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমে আসে।
৮. আদা: পরিমানমত আদা চিবিয়ে বা রস করে খেলে পেট ফাপা দুর হয়।
এছাড়া জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন। অতিরিক্ত মশলাযুক্ত ও ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। ধূমপান ও অতিরিক্ত চা-কফি গ্রহণ বন্ধ করুন। প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করুন।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ছোট মনে হলেও দীর্ঘমেয়াদে এটি আলসার কিংবা গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের মতো জটিল রোগে রূপ নিতে পারে। তাই ওষুধের ওপর নির্ভর না করে প্রাকৃতিক সমাধানে মনোযোগ দিন। ঘরোয়া প্রতিকারেই মিলতে পারে নিরাময়ের চাবিকাঠি।

 
 
0 Comments