কচুর লতি বিক্রি করে সংসার চলে বৃদ্ধ আমজাদের

 


সৈয়দ ভাই:

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পাঁচটিকড়ি গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডে বাস আমজাদ আলীর। বয়স আশি পেরিয়েছে। তবে গ্রামবাসীর কাছে তিনি ‘মল্লিক’ নামেই পরিচিত। জীবনের পড়ন্ত বিকেলে এসে তার নেই কোনো নির্ভরতা, নেই স্থায়ী কোনো উপার্জনের উৎস।

যৌবনে আমজাদ ছিলেন কাঠুরে। কাঁধে কুড়াল তুলে ছুটতেন জঙ্গলে কাঠ কাটতে। শক্তিমত্তার সেই দিনগুলো এখন কেবল স্মৃতি। বার্ধক্যের ভারে ন্যুব্জ দেহ আর আগের মতো চলাফেরা করতে পারে না। তবু থেমে নেই জীবনের সংগ্রাম।

ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি গ্রামের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত হেঁটে সংগ্রহ করেন কচুর লতি। এরপর যান স্থানীয় বাজারে। বিক্রি করে যা পান, তাই দিয়েই চালান সংসার। কোনো দিন আয় হয় ৫০ টাকা, কোনো দিন ৮০। এতেই তৃপ্ত এই জীবনের যোদ্ধা।

তাঁর সঙ্গিনী, আমজাদের স্ত্রীও বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভোগেন। সামান্য শক্তি নিয়ে তিনিও লড়ে চলেছেন। অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে যা রোজগার হয়, তা দিয়েই সাধ্যমতো পাশে থাকেন স্বামীর।

সরকারি সহায়তা বলতে বয়স্ক ভাতা আর মাঝে মাঝে মেলে ভিজিএফ’র চাল। কিন্তু তা দিয়ে তো চলে না দিন। পরিবারে আছে দুই ছেলে আর এক মেয়ে, সবার ঘাড়েই অভাবের ভার।

এলাকাবাসী বলছেন, সরকারি সহায়তা বাড়ানো গেলে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরবে আমজাদ আলীর মতো অসহায় মানুষের জীবনে। সময় এসেছে এমন প্রবীণদের পাশে দাঁড়ানোর—যারা লড়াই করে বেঁচে থাকার মানে আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন।


Post a Comment

0 Comments